বলিউড
তারকা ঋত্বিক রোশান ও সুজান রোশান তাঁদের ১৭ বছরের সম্পর্কের ইতি
টেনেছেন। বন্ধুদের
অপরিসীম প্রচেষ্টার পরও টিকলো না সুজান-ঋত্বিকের ঘর। প্রথম দিকে বিবাহবিচ্ছেদের কারন হিসেবে ‘কাইটস’ চলচ্চিত্র
নায়িকা বারবারা মরি এবং ঘনিষ্ঠ
বন্ধু অর্জুন রামপালের নাম উঠলেও বউ-শাশুড়ি বিরোধই মূল কারণ। এছাড়া ঋত্বিকের নিজের মধ্যেই ডুবে থাকাকেও তাদের বিবাহ
বিচ্ছেদের আরেকটি কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই
দম্পতির কাছের কয়েকজন বন্ধু সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে জানায়, সুজান চেয়েছিল
পারিবারিক বাসস্থান জুহুর ‘প্লাজিও’ থেকে স্বামী আর সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র চলে
যেতে। কিন্তু ঋত্বিক তার বাবা মা এবং বোনদের থেকে আলাদা থাকতে
রাজি ছিলেন না ।
অন্যদিকে
এমনও না যে সুজান এবং ঋত্বিককে ‘প্লাজিও’তে ছোট পরিসরে
থাকতে হয়েছে।
এই দম্পতির একই বাড়ির আলাদা ফ্লোরে স্বাধীনভাবেই জীবনযাপন করতে পারতেন।কিন্তু
বউ শাশুড়ির মধ্যকার কলহ দিন দিন বড় আকার ধারণ করায় একই বাড়িতে থাকা
অসম্ভভ হয়ে পরে সুজানের জন্য। এ কথার
সত্যতা হৃতিক নিজেই স্বীকার করেছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে ছুটি কাটানোর সময়
হৃতিক তাঁর ওয়েবসাইটে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য দিয়েছেন। বিবৃতিতে ঋত্বিক
রোশান লিখেছেন, 'সুজান
আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আমাদের ১৭ বছরের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে।'
এ ছাড়া নিজের
ফেসবুক পেজে ঋত্বিক লিখেছেন, 'সুজান সারা জীবন
আমার জীবনের একমাত্র
ভালোবাসা হয়ে থাকবে। যদি আলাদা হয়ে ওর মুখের হাসি আরো উজ্জ্বল হয়, তবে তা হবে আমার ভালোবাসার আরো একটি প্রাপ্তি।'
বলিউডের এই 'গোল্ডেন কাপল'
খ্যাত জুটির
আলাদা হয়ে যাওয়া ভক্তদের কাছে
কিছুটা অবাক
করার মতো হলেও দুই পরিবারের কাছের বন্ধুর কাছে মোটামুটি পুরনো খবর। প্রায় চার
মাস আগেই দুই ছেলের হাত ধরে রোশানদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন সুজান। কিন্তু 'কৃশ থ্রি'
ছবির প্রচারণায়
যেন কোনো 'আঁচ' না আসে সে জন্য বিষয়টি গোপন রাখা হয়।
সে সময়ে রোশান
পরিবার থেকে বলা হয়, অসুস্থ বাবা
সঞ্জয় খানের কাছে থাকতে
গেছেন সুজান। অথচ
বাবার 'সঞ্জয় প্লাজা'য় মাত্র ১০ দিন থেকে আন্ধেরিতে নিজের ফ্ল্যাটে চলে
যান সুজান। বউ-শাশুড়ি বিরোধ এবং হৃতিকের কাজই নাকি দূরত্ব সৃষ্টি করছিল এই দম্পতির মাঝে, যা ধীরে ধীরে বিচ্ছেদে রূপ নিয়েছে।
এদিকে ঋত্বিকের
বিবৃতির পর সুজান মিডিয়ার কাছে একটি ছোট বিবৃতি পাঠান, যাতে বলা হয়েছে,
'যা হয়েছে তা
থেকে ফিরে আসার উপায় নেই। আশা করব,
মিডিয়া বিষয়টি বিবেচনা
করে আমাদের প্রাইভেসিকে সম্মান করবে।'
সদ্য
বিচ্ছেদ ঘোষণার পর বুধবার রাতে প্রথম জনসমক্ষে আসেন সুজান। মাহিপ কাপুর, সীমা খান এবং
সুজান মিলিত ভাবে একটি লাক্সারি স্টোর খুলছেন। সেখানই বলিউডের সমস্ত
তারকা, মহাতারকারা
উপস্থিত ছিলেন, শুধু
ছিলেন না হৃতিক। সেখানেই
সুজান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, তাদের
বিচ্ছেদের পেছনে কোনো তৃতীয় ব্যক্তি
নেই। এই ঘটনার জন্য কেউ দায়ী নয়। পরিস্থিতি তাদের দুজনকে এই সিদ্ধান্ত নিতে
বাধ্য করেছে।
এই
বিচ্ছেদের সঙ্গে সঙ্গে কানাঘুষা শোনা যাচ্ছিল মডেল-অভিনেতা অর্জুন রামপালের সঙ্গে
সুজানের ঘনিষ্ঠতাই এই বিচ্ছেদের পেছনে অন্যতম কারণ। এর আগে অর্জুন রামপালও
এই রটনা উড়িয়ে দেন।
ডিসেম্বরের
১৩ তারিখ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে হৃতিক বলেন, তাদের তেরো বছরের বিবাহিত
সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছেন সুজানই। উল্লেখ্য,ঋত্বিক
রোশান ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর সঞ্জয় খানের কন্যা সুজান খানকে বিয়ে
করেন। এ জুটি বলিউডের ফেয়ারিটেল জুটি বলে খ্যাত ছিল। বৈবাহিক জীবনে এই দম্পতির
রেহান এবং রিধান নামে দুই ছেলেও রয়েছে।
এদিকে আরেকটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত
ছিলেন হৃতিকের বাবা রাকেশ রোশনও। তিনিও এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন