সুখ কে না চায়, বলুন? সবাইতো সুখী হতে চায়...। কিন্তু ইচ্ছে করলেই কি সুখী হওয়া যায়? বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ব্রাজিলীয় লেখক পাওলো কোয়েলহো বাতলে দিয়েছেন সুখী হওয়ার কয়েকটি উপায়। এ কথাসাহিত্যিক বলেছেন, প্রতিদিন উপায়গুলো মানলে সুখী হওয়া কঠিন কিছু নয়, মানুষ তার জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের ভালোলাগাগুলোকে যদি একসাথে জুড়ে দিতে পারে তবে সুখি হওয়া আহামরি কোন সমস্যা নয়, প্রয়োজন শুধু মানসিকতার এবং একটু ধৈজ্যের। চলুন পাউলোর দেখানো কিছু সুখী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নিইঃ-
অন্যকে ধন্যবাদ দিনঃ-
সকালে ঘুম থেকে উঠে
ফ্রেশ হয়ে মুঠোফোন,
ফেসবুক কিংবা ই-বার্তার মাধ্যমে কাউকে না কাউকে ধন্যবাদ দিন
অথবা তার ভালো কাজের প্রশংসা করুন। প্রশংসা এবং প্রেরণা আপনার দিনটির জন্য শুভ হতে
পারে এবং গবেষণা বলছে, এতে
করে আপনার দিনটি ভালো যেতে পারে।
যা ভালো পারেন তা-ই করুনঃ-
যে বিষয়টি আপনি ভালো পারেন, সেটিই প্রতিদিন চর্চা
করতে থাকুন। দেখবেন এ যোগ্যতা অন্যদের
থেকে আপনাকে আলাদা করে তুলছে। এতে করে আপনি সারা মাসই সুখী
থাকবেন।
দিনে অন্তত ৫টি ভালো কাজ করুনঃ-
অন্যের জন্য দিনে অন্তত ছোট্ট হলেও
পাঁচটি ভালো কাজ করুন। এতে করে আপনি
অনাবিল শান্তি অনুভব করবেন। দিনে না হোক সপ্তাহে অন্তত ছোট্ট
পাঁচটি পরোপকারমূলক
কাজ করার চেষ্টা করুন। তবে মানসিকভাবে তৃপ্ত হতে হলে জেনেশুনে ও সচেতনভাবে
এ কাজগুলো করতে হবে। কাজ করার পর এ নিয়ে ভাবলে চলবে না। তাহলে হয়ত আপনি আপনার
আনন্দটি হারিয়েও ফেলতে পারেন।
সানন্দে বেরিয়ে পড়ুন কোথাওঃ-
এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ প্রিয় সিনেমা
দেখে মূলত এন্ডোরপিন লেভেলকে
বাড়ানোর জন্য। এন্ডোরপিন হচ্ছে এক ধরনের হরমোন; যা মানুষের হতাশা, কষ্ট, দুঃখ ভুলিয়ে দিতে
সাহায্য করে। এ কারণে যাপিত জীবনে হাঁপিয়ে উঠলে একটু ছুটি নিয়ে নিন। ক্যালেন্ডারে কিছু দিন রাখুন, যাতে প্রিয় সঙ্গী বা বন্ধুবান্ধবকে
নিয়ে কোথাও ক’টা
দিন বা কয়েক সপ্তাহের জন্য বেড়িয়ে আসা যায়। মন ভাল রাখার এ এক অনন্য পদ্ধতি হিসেবে
বিবেচিত হতে পারে।
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানঃ-
মনোবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে অনেক গবেষণা
রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, সামাজিক সম্পর্ক
মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করে। বিচ্ছিন্ন হয়ে সুখী হওয়া কঠিন বৈকি। মানুষের
সঙ্গে মেশার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে বন্ধু,
আত্মীয়স্বজন ও
প্রতিবেশীদের সঙ্গে। আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা তাদের
সঙ্গে শেয়ার করুন। ব্রিটিশ হাউসহোল্ড প্যানেল সার্ভেতে দেখেছি, সামাজিক সম্পর্ক
বাড়লে মানসিক তৃপ্তিও
বাড়ে।
ঘুমানোর আগে ভালো ঘটনা লিখে রাখুনঃ-
প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে অন্তত ১০ মিনিট কাগজ-কলম
নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। টুকে রাখুন
দিনে ঘটে যাওয়া তিনটি ইতিবাচক ঘটনার কথা। ইতিবাচক ঘটনাগুলো কখন
ঘটেছে, কেন ঘটেছে
ইত্যাকার বিষয়ে লিখে রাখতে পারেন। এটি কম্পিউটার বা নিজের ব্লগেও লিখতে
পারেন। কোথায় লিখলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়,
গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে
সেগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা। এ তিনটি ঘটনা দুনিয়া কাঁপানো হবে তা
নয়, এটি
হবে সাদাসিধা।
ঘটনা হবে এমন— ভাই
বা বোনের চাঁদের মতো ফুটফটে পুত্র বা
কন্যাসন্তান হয়েছে কিংবা স্বামী অফিস থেকে ফেরার সময় প্রিয়
আইসক্রিম এনেছে ইত্যাদি।
এতে করে আপনি মানসিক তৃপ্তি পাবেন নিঃসন্দেহে।
তাই, খুব সহজে আমরা
নিজেদের সুখী রাখতে পারি, সেদিন হয়তো খুব বেশী দূরে নয়, যখন আমাদের মনে দুঃখ বলে
কোন কিছুই থাকবে না। সুখী রবো সবাই!
আপলোডের
তারিখঃ ২৭ জানুয়ারী, ২০১৪ ইং।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন